বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

জাতীয় নির্বাচনে ভারত হস্তক্ষেপ করে না: কাদের

জাতীয় নির্বাচনে ভারত হস্তক্ষেপ করে না: কাদের

ঢাকা, ২১ এপ্রিল, এবিনিউজ : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমাদের ক্ষমতার উৎস বাংলাদেশের জনগণ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারত এবং দেশটির সরকার হস্তক্ষেপ করবে না। আগেও করে নাই। তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। অন্যান্য দেশ এ বিষয়ে খুব দৌড়াদৌড়ি করে।’

আজ শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলের ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দিল্লি সফরে যাচ্ছেন।

আসন্ন এই সফর সম্পর্কে তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রোববার ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ঢাকা ত্যাগ করবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামীকাল সকাল ১০টায় আমরা ১৯ সদস্যের একটি দল ভারতের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবো। সেখানে পার্টি টু পার্টি আলোচনা হবে। পাশাপাশি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথেও আলোচনা হবে। এই সফরটি খুব শর্ট কিন্তু গুরুত্ববহ।

তিনি বলেন, ভারতে কর্মসূচির মধ্যে আছে, ২২ এপ্রিল মহাত্মা গান্ধির স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা অর্পণ ও বাংলাদেশ হাই কমিশনের আয়োজনে নৈশভোজে অংশগ্রহণ। ২৩ এপ্রিল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)'র সঙ্গে আলোচনা আর ২৪ এপ্রিল ভারত ত্যাগ।

এর আগেও ভারত যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, এই সফরের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে অন্য কোনো কারণ খোঁজার কারণ নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত সফর নিয়ে কথা উঠছে কেন। ক'দিন আগেও তো ২০ সদস্যের বেশি প্রতিনিধিদল চিন সফরে গিয়েছিল। চিনকে তাহলে আপনারা ছোট করে দেখছেন?

মন্ত্রী বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, ভারতের সাথে আমাদের সীমান্ত অনেক বড়। তাদের সাথে যুদ্ধ করে তো সমাধান হবে না। আলাপ-আলোচনা করেই সমাধান করতে হবে।

সফর প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ এ নেতা বলেন, আমাদের ভিজিটটা যেহেতু খুব ছোট, তারপরও সবধরনের চেষ্টা থাকবে। কথা হবে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার চাইলেই তো তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে পারবে না। কারণ পশ্চিমবঙ্গের একটা প্রভাব আছে।

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন- দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, অ্যাড. মো. মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম।

এছাড়া ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. মো. আব্দুস সবুর, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, নির্বাহী সদস্য মো. গোলাম কিবরিয়া রাব্বানী চিনু।

“বামপন্থী ফখরুলের আল্লাহ্-খোদায় বিশ্বাস কম”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বামপন্থী রাজনীতি করতেন বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল বামপন্থী রাজনীতি করায় আল্লাহ্-খোদায় তার বিশ্বাস কম।’

গত ১৯ এপ্রিল রাজধানীতে খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের চক্রান্তের বিষয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেখুন বেগম জিয়ার বয়স হয়েছে, হায়াত তো জন্মের সময় নির্ধারণ হয়ে যায়। এটা পবিত্র কোরআন শরিফেই লেখা আছে।’

‘আওয়ামী লীগ কখনও এমন নোংরা রাজনীতি করেনি, করবেও না। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকার কোনো রাজনীতি করছে না।’

আর গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকার যে চক্রান্ত করে আসছে, সেটি ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে।

পরদিন করা সংবাদ সম্মেলনেও এই বক্তব্য দেয়ায় ওবায়দুল কাদেরের তীব্র সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের এই বক্তব্য ভয়ঙ্কর অশনি সংকেত।’

ফখরুলের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কাদের বলেন, ‘ঠিকই তো বলেছি। আমি এই রুম থেকে ওই রুমে যাওয়ার আগেও মারা যেতে পারি। উনি বামপন্থী রাজনীতি করেছেন, তাই আল্লাহ-খোদায় বিশ্বাস কম।'

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাত্রজীবনে দীক্ষা নিয়েছেন বাম রাজনীতিতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময় পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের একজন সদস্য ছিলেন এবং সংগঠনটির এসএম হল শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সময়ে তিনি সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন।

স্বাধীনতার পর ১৪ বছর সরকারি চাকরি করার পর রাজনীতিতে ফিরে মির্জা ফখরুল আর বামপন্থায় বিশ্বাস রাখেননি। ১৯৮৬ সালে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষকতার চাকরি থেকে অবসর নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন। তার বাবা মির্জা রুহুল আমিন তখন এরশাদ সরকারের প্রতিমন্ত্রী।

১৯৮৮ সালে বাবা মির্জা রুহুল আমিন জাতীয় পার্টির হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বছরেই ছেলে মির্জা ফখরুল ঠাকুরগাঁও পৌরসভার চেয়ারম্যান হন। আর এরশাদ সরকারের পতনের শেষ দিকে তিনি যোগ দেন বিএনপিতে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান প্রমুখ।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত