চট্টগ্রাম, ০৪ মে, এবিনিউজ : স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটিত হয়নি। গোলপাহাড় মোড়ের রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে নেভালে যাবার মাঝখানে কিছু সময় তাসফিয়া কোথায় ছিলো, কিংবা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে কোন সিএনজি ট্যাক্সিতে উঠেছিলো এসব বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাসফিয়ার মৃত্যুর কারণ হত্যা না আত্মহত্যা তা এখনো পরিষ্কার নয়। ময়নাতদন্তশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার তাসফিয়ার মৃতদেহ গ্রামের বাড়ি টেকনাফে ডেইলপাড়ায় নিয়ে গেছে পরিবারের সদস্যরা।
গত ২ মে সকালে নগরীর পতেঙ্গার নেভাল এলাকা থেকে তাসফিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তাসফিয়ার মৃত্যুর কোন কারণ এখনো জানা না গেলেও ছয়জনকে আসামি করে গতকাল বৃহস্পতিবার পতেঙ্গা থানায় বাবা মোহাম্মদ আমিন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে। মামলায় বন্ধু আদনান ছাড়া আরো পাঁচজনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। বাকীরা হলো, ষোল বছরের কিশোর সোহাইল, শওকত মিরাজ, আসিফ মিজান (২৩), ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম (২৪) ও ফিরোজ (৩০)। এছাড়া আরো অজ্ঞাতনামা পাঁচ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে বন্ধু আদনানকে গ্রেপ্তার করলেও তাসফিয়ার মৃত্যুর বিষয়ে তার কাছে কোন তথ্য পায়নি পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদনানকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী রবিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কর্নফুলী জোনের সহাকরী কমিশনার (এসি) জাহেদুল ইসলাম বলেন, নিহত তাসফিয়ার বাবা বাদি হয়ে ছয়জনেক আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছে। গ্রেপ্তার আদনাদের কাছে আশানুরূপ তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে তাসফিয়া ওআরনিজাম আবাসিক থেকে বের হয়েছে তা আমারা নিশ্চিত হয়েছি। কিন্তু রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে নেভালে কিভাবে গেলো তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। আশা করছি, দ্রুতসময়ে তাসফিয়ার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হবে।
মামলার এজাহারে আমিন দাবি করেছেন, তিনি একজন ব্যবসায়ী ( কিসের ব্যবসা করেন তা উল্লেখ করেনি)। টেকনাফ পৌরসভার ডেইলপাড়ায় তাদের বাড়ি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নগরীর অভিজাত এলাকা ওআরনিজাম আবাসিকে কে আর এস ভবনের চতুর্থ তলায় থাকেন। তার ভাই নুরুল আমিন নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি এক নম্বর রোডের ছয় নম্বর বাসায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকেন। মেয়ে তাসফিয়া আমিন (১৬) সানসাইন গ্রামার স্কুলে নবম শ্রেনীতে পড়ে। গত ১ মে বিকাল সাড়ে পাঁচটায় কাউকে কিছু না বলে তাসফিয়া বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরে জানতে পারে বন্ধু আদনানের সাথে বের হয়েছে। পরদিন (২মে) পতেঙ্গা নেভাল এলাকার তাসফিয়ার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
তাসফিয়াকে হত্যা করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে এমনটি দাবি করা হলেও কে বা কারা হত্যা করেছে তার কোন উত্তর পায়নি পুলিশ।
সংশ্লিষ্টসুত্রে জানা যায়, গোলপাহাড় মোড়ের চায়নাগ্রিল থেকে বের হয়ে তাসফিয়াকে একটি সিএনজি ট্যাক্সিতে তুলে দিয়ে অন্য একটি ট্যাক্সিতে জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটির বাসায় চলে যায় আদনান। রেস্টুরেন্ট থেকে যে কাপড় পরা অবস্থায় তাসফিয়া বের হয়েছিলো মৃত্যুর সেময় সেই কাপড় তার পরনে ছিলো না। মাঝাখানে কোথায় কাপড় পরিবর্তন করেছে তা জানা যায়নি এখনো। তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকে জানিয়েছে রাত দশটার দিকে তাসফিয়াকে নেভাল এলাকায় একা বসে থাকতে দেখেছে।
রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে মাঝখানের সময়টুকু কোথায় ছিলো কিংবা সিএনজি ট্যাক্সি চালককে পাওয়া গেলে জানা যাবে তাসফিয়া হত্যার রহস্য।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি