বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

ফের অসুস্থ ‘বয়স্ক বালক’ বায়েজিদ

ফের অসুস্থ ‘বয়স্ক বালক’ বায়েজিদ

মাগুরা, ০৬ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : বিরল রোগ প্রজেরিয়া-য় আক্রান্ত মাগুরার আলোচিত ’বয়স্ক বালক’ খ্যাত বায়েজিদ আবারও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মাত্র ৫ বছর বয়সেই তার চেহারা দেখতে অশীতিপর বৃদ্ধের মতো।

বায়েজিদের বাবা লাভলু শিকদার জানান, বায়েজিদ সর্দি, কাশি এবং প্রচন্ড শ্বাস-কষ্ট ও প্রস্রাবের রাস্তায় সমস্যাসহ নানা ধরণের জটিলতায় ভুগছে।

মাগুরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিষ বিশ্বাস জানান, নানাবিধ শারীরিক সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে বিরল রোগ প্রজেরিয়া-য় আক্রান্ত বায়েজিদের পুরুষাঙ্গের চামড়া নীচের দিকে ঝুলে গেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ ধরণের শারীরিক জটিলতাকে ’প্রিরিপিউস’ বলা হয়। তার মতে, এ জটিলতা নিরসনে অপারেশন প্রয়োজন।

তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে সার্জারী কনসালটেন্ট-এর সঙ্গে আলাপ করা হলে তিনি প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত বায়েজিদের ক্ষেত্রে এ অপারেশন ঝুঁকিপূর্ণ বলে মতামত দিয়েছেন।

বায়েজিদের পৈতৃক বাড়ি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার খালিয়া গ্রামে। তার বাবা লাভলু শিকদার পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ২০১২ সালের মে মাসে বায়েজিদের জন্ম। জন্মের পরই তার চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ দেখা যায়। দিনে দিনে বায়েজিদের শরীরে বার্ধক্যের ছাপ আরো প্রকট হতে থাকে। জন্মের ৩ মাসের মধ্যেই তার দাঁত ওঠে। জন্মের পর বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হলেও স্বাভাবিক চেহারায় ফিরে আসেনি শিশুটি।

লাভলু জানান, এ পর্যন্ত ছেলের সুস্থতার জন্য অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। ছেলের জন্য আর অর্থ ব্যয় করা আমার সামর্থের বাইরে। তবুও ছেলের মুখের দিকে তাকালে কষ্ট হয় তার। এ জন্যই ছেলের সুস্থতার কথা ভেবে খরচ করে চলেছেন।

বায়েজিদের মা তৃপ্তি খাতুন বায়েজিদ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে জানালেন, অন্য শিশুরা সাধারণত ১০ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে হাঁটা শিখলেও বায়েজিদ হাঁটা শিখেছে সাড়ে তিন বছর বয়সে। অথচ বায়েজিদের দাঁত ওঠে জন্মের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই।

গত বছর ২৯ মে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড জানায় বায়োজিদ বিরল প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে সময় তাকে তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও দেড় মাস ধরে চিকিৎসা করানো পর কোন ফলাফল না পেয়ে দরিদ্র লাবলু শিকদার শিশুপুত্র বায়োজিদকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

দেবাশিষ বিশ্বাস বলেন, ‘প্রজেরিয়া রোগটি একটি বিরল জেনেটিক অসঙ্গতি। এক কোটি শিশুর মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত একজনের অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত ১০০টির মতো রোগী শনাক্ত হয়েছে। দৈহিক বৃদ্ধি এবং দৃষ্টিশক্তিসহ অন্যান্য বিষয় স্বাভাবিক থাকলেও এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের শরীরের চামড়া বৃদ্ধ মানুষদের মত কুচকানো হয়। তবে, এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত ১৩/১৪ বছরের বেশিদিন বাঁচে না বলে জানালেন তিনি।’

এবিএন/শংকর রায়/জসিম

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত