বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

ধর্ষিতা রোহিঙ্গা নারীদের জীবন ৬ মাস পর

ধর্ষিতা রোহিঙ্গা নারীদের জীবন ৬ মাস পর

ঢাকা, ২৬ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : সীমা (ছদ্মনাম) মিয়ানমারের মংডুতে ধর্ষণ শিকার হন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৫ সদস্যের দ্বারা। এর পর নভেম্বরের ৯ তারিখে ১২ দিন হেঁটে কোনোমতে পালিয়ে আসেন বাংলাদেশে। কিন্তু সীমা তখনো জানত না ধর্ষণের ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশে আসার পর যখন তিনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। ডাক্তার তাকে বলে দেন এখন সন্তান নষ্ট করলে তার জীবনের ঝুঁকি তৈরি হবে।

সীমা এখন ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এখানে তাকে কে দেখাশোনা করে? তার সংক্ষিপ্ত উত্তর ছিল, ‘আশপাশের ঘরের মানুষ।’

শিবিরে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ধর্ষণের শিকার বেশ কিছু রোহিঙ্গা নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।

গত বছরের আগস্টের শেষ সপ্তাহে মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে যে কয়েক লক্ষ মানুষ এসে আশ্রয় নেয় তাদের বেশির ভাগ ছিল নারী এবং শিশু।

বাংলাদেশে আসার ৬ মাস পর কেমন আছে এসব নারীরা?

উখিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ পর্যন্ত যত রোহিঙ্গা এসেছে তার মধ্যে ৫২% নারী। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৯৪ হাজার নারী সন্তানধারণে সক্ষম।

মংডুর নাইসং এলাকায় বাড়ী ছিল সালমার (ছদ্মনাম)। তিনিও ধর্ষণের শিকার হন মিয়ানমার সৈন্যদের দ্বারা। জানালেন, স্বামী ২ মাস হল কাজের খোঁজে গিয়ে এখনো ফেরেনি। ধর্ষণের পর মানসিক যে কষ্ট এবং গ্লানি সেটা কাওকে বোঝানো যাবে না। সেই মানসিক চাপরে সঙ্গে যোগ হয়েছে স্বামীর লাপাত্তা হয়ে যাওয়া।

এখানে আসার পর তিনি কোন চিকিৎসা নিয়েছেন? জবাবে জানান, (স্থানীয়) ক্লিনিকে গেলে তারা ইনজেকশন দিয়েছিল, পরে আবার যেতে বলেছিল কিন্তু আমি আর যাইনি।

বেসরকারি সংস্থা রিসার্চ ট্রেনিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল, যারা রোহিঙ্গা নারীদের নিয়ে কার করে, তার একজন কর্মকর্তা মিজ শারমিন বলছিলেন, এসব নির্যাতিত নারীদের এখন দরকার কাউন্সেলিং অর্থাৎ মানসিক পরামর্শ। যাতে করে তারা এই ট্রমা থেকে বের হয়ে আসতে পারে। একই সঙ্গে দরকার ফলো-আপ যাতে করে তাদের কোনো শারীরিক অসুবিধা না হয়। কিন্তু সেটা তারা করে না।

সীমা ও সালমা র মতো আরও অন্তত ১০ জন মেয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে যারা মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সেই ঘটনার ৬ মাস পরও তার ক্ষতচিহ্ন এখনো স্পষ্ট তাদের মনে, যার প্রভাব তাদের শরীর ও মনে প্রভাব ফেলেছে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলছেন, তারা ক্যাম্পের ভিতরে নারী কর্মী পাঠিয়ে এসব তথ্য সংগ্রহ করেন কারণ ওই নারীরা প্রকাশ্যে এসব কথা বলতে লজ্জা পান। ফলে চিকিৎসা দেওয়াটাও দুষ্কর হয়ে পড়ে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

এবিএন/সাদিক/জসিম/এসএ

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত